এম আই ফারুক আহমেদ, কালের খবর :
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, অন্যায় বা ভুল করলে ভয় পুলিশ বিভাগের যে কারো বিরুদ্ধে রিপোর্ট করবেন। কিন্তু মিথ্যা কথা লিখবেন না। বানিয়ে লিখবেন না।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, সাংবাদিকতায় এখন অনেক চৌকস মেধাবীরা আসছেন। তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। পুলিশ বিভাগেও স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আমাদের ভালো কাজ মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণ যেনো জানতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের শাপলা কনফারেন্স সেন্টারে সৌজন্য সাক্ষাত অনুষ্ঠানে ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফের নেতৃত্বে কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে। মেইন স্ট্রিম মিডিয়ায় জবাবদিহিতা রয়েছে। কিন্তু সোস্যাল মিডিয়ায় কোনো জবাবদিহিতা নেই। এই মিডিয়া থেকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এটা একটা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। এটা মোকাবেলা করতে যৌথভাবে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
তিনি বলেন, এক সময় ঢাকায় ১৬৫টি ছিনতাই স্পট ছিল। বিমান বন্দর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত রেল লাইনের দুই পাশে ছিল মাদকের হাট। এখন রাজধানীসহ সারাদেশে মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড অনেকটাই কমে এসেছে। আগে প্রতিদিন গুলি ছিনতাইয়ের খবর পাওয়া যেত। এখন ডিএমপি কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ এক সময় টেলিভিশন চ্যানেল দেখলে পালাতো। এখন একজন রাস্তায় দায়িত্ব পালন করা কনস্টেবলও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আমরা এই আস্থার জায়গাটা তৈরি করতে পেরেছি।
বেনজীর আহমেদ বলেন, গুলশান বারিধারা এলাকায় কোনো চুরি ছিনতাই হয়না। কারণ ওই এলাকাগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায়। গুলশান, বারিধারা, বনানী এলাকায় সাড়ে ১১শ’ সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে স্থানীয়দের সহায়তায়।
বিদেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, লন্ডনে ১৩ মিলিয়ন সিসি ক্যামেরা রয়েছে। শুধুমাত্র লন্ডন সিটিতে রয়েছে ১ মিলিয়ন সিসি ক্যামেরা। প্রতিটা লোকের গতিবিধি অনুসরণ করা হয়।
পুলিশের আচরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশে কেন দুর্নীতি থাকবে, কেনো ভুল বোঝাবুঝি হবে? পুলিশের আচরণ পরিবর্তনে কাজ চলছে। পুলিশ সদস্যদের আরও স্মার্ট হওয়ার আহবান জানান আইজিপি।
তিনি বলেন, করোনায় ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা হিসেবে পুলিশ সাংবাদিক একত্রে কাজ করেছে। ২৫০ শয্যা পুলিশ হাসপাতালকে ১৫ শ’ শয্যায় উন্নিত করা হয়েছে। শুধু পুলিশ সদস্য নয় সাধারণ মানুষও সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছে। করোনায় ৮৫ পুলিশ সদস্য মারা গেছেন। তবে বর্তমানে পুলিশ বাহিনীতে করোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
দেশের উন্নয়নে উভয়কে একযোগ কাজ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য একটি ভাল দেশ রেখে যেতে চাই।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফ। এছাড়া ক্র্যাবের নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন ক্র্যাবের যুগ্ম সম্পাদক হাসানুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আরিফ, অর্থ সম্পাদক এমদাদুল হক খান, দপ্তর সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ইমু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রুদ্র মিজান, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক সাজ্জাদ মাহমুদ খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক রুদ্র রাসেল, কার্য নির্বাহী সদস্য গোলাম সাত্তার রনী, এসএম মিন্টু হোসেন, জামশেদ নাজিম প্রমুখ। এসময় পুলিশ সদর দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।